প্রাণহীন মরুভূমিতে এক জীবন্ত ইতিহাস: সাহাবি গাছ

দূর মরুভূমির বুকে দাঁড়িয়ে থাকা এক প্রাচীন বৃক্ষ — সাহাবি গাছ (Sahabi Tree), ইসলামী ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ নীরব সাক্ষী হিসেবে পরিচিত। এই গাছের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর তরুণ বয়সের এক মর্মস্পর্শী ঘটনা।

কোথায় অবস্থিত সাহাবি গাছ?
সাহাবি গাছটি আজকের জর্ডানের বাদিয়াহ (Badiah) অঞ্চলে অবস্থিত, আম্মান শহর থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে। এই একাকী গাছ মরুভূমির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে কয়েক শত বছর ধরে।

ইতিহাস ও গুরুত্ব
মুসলিম ঐতিহাসিকদের মতে, যখন হযরত মুহাম্মদ (সা.) ১২ বছর বয়সে তাঁর চাচা আবু তালিবের সঙ্গে সিরিয়ার দিকে একটি বাণিজ্য সফরে যাচ্ছিলেন, তখন এই গাছের নিচে বিশ্রাম নেন।

সেসময় একজন খ্রিস্টান সন্ন্যাসী, যার নাম ছিল বাহীরা (Bahira), এই ছেলেটির মধ্যে বিশেষ আলোকচ্ছটা লক্ষ্য করেন। বাহীরা বুঝতে পারেন, এ ছেলেই ভবিষ্যতের সেই প্রেরিত নবী, যার আগমনের পূর্বাভাস ছিল পূর্ববর্তী আসমানি গ্রন্থগুলোতে। তিনি চাচা আবু তালিবকে সতর্ক করেন যাতে ছেলেটির প্রতি বিশেষ যত্নবান হন, কারণ মক্কার বাইরে তাঁকে নানা বিপদের সম্মুখীন হতে হতে পারে।

এই সাক্ষাতের মূল স্থান হিসেবে ইতিহাসে সাহাবি গাছ অমর হয়ে আছে। গাছটি সেই বিশ্রামের স্থান যেখানে নবী করিম (সা.) তাঁর ছায়া ফেলেছিলেন।

আজকের দিনে সাহাবি গাছ
আজও এই গাছ জীবিত আছে, এবং অত্যন্ত সম্মানের সাথে সংরক্ষিত। অনেক মুসলিম এই গাছ দেখতে যান, যেহেতু এটি মহানবী (সা.)-এর স্মৃতির সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে।

জর্ডান সরকার এই এলাকাকে সুরক্ষিত ঘোষণা করেছে এবং এটিকে একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে রক্ষা করছে। সেখানে বেড়া দেওয়া হয়েছে যাতে গাছটি কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

সাহাবি গাছ আমাদের কী শিক্ষা দেয়?

  • নবীজীর (সা.) জীবন সম্পর্কে গভীর উপলব্ধি।
  • ইসলামের ইতিহাসের প্রতি ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা বৃদ্ধি।
  • প্রাকৃতিক নিদর্শন ও আল্লাহর কুদরতের প্রতি গভীর মুগ্ধতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *